ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী ও রাসূল মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তিনি মানব জীবন পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে রেকেছেন অনন্য অবদান। এমনকি রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রেও তার জ্ঞান ছিল অপরীসিম।
তৎকালীন সময়ে আরব উপদ্বীপের বাইরে পৃথিবীর প্রধান রাষ্ট্রের শাসকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পাঠিয়েছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।

ষষ্ঠ হিজরিতে মিশরের শাসক আল-মুকাউকিসের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে চিঠি পাঠান মুহাম্মদ (সা.)। ওই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, যদি তিনি মুসলমান হন, তাহলে আল্লাহ তার পুরস্কার দ্বিগুণ করে দেবেন।
ওই চিঠিতে একটি সুরার উদ্ধৃতিও দিয়েছিলেন নবী। উদ্ধৃতিটি হলো- ‘হে আহলে কিতাব, তোমরা এমন কথার দিকে আস, যেটি আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সমান যে, আমরা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারও ইবাদাত না করি। আর তার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক না করি এবং আমাদের কেউ কাউকে আল্লাহ ছাড়া রব হিসেবে গ্রহণ না করি। ’ তারপর যদি তারা বিমুখ হয় তবে বল, ‘তোমরা সাক্ষী থাকো যে, নিশ্চয় আমরা মুসলিম’। (সুরা আল-ইমরান, আয়াত: ৬৪)।

৬ষ্ঠ হিজরিতে ইথিওপিয়ায় সম্রাট আশামা ইবনে আবজার, বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সম্রাট হেরাক্লিয়াস, পারস্যের রাজা চসরো, বাহরাইনের শাসক মুনজির ইবনে সাওয়া, ইয়েমেনের রাজপুত্র হিমায়রিত হরিত ও হরিত গাসানি এবং শামের গভর্নরকে দূতের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।
রাজা ও রাজকুমারদের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে নবী মূলত ইসলামের দাওয়াত দিয়েছিলেন। চিঠিগুলোর সবই এই বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ করা হয়েছিল যে, ‘যদি আপনি মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে আপনি আপনার অনুসারীদের পাপের বোঝা বহন করবেন। ’

ঐতিহাসিকরা বলছেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর চিঠি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন পারস্যের রাজা চসরো। ওই ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যে তিনি মারা যান। এরপর সেই সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ে।
ওই চিঠির একটি অংশ তুরস্কের ইস্তাম্বুল মিউজিয়ামে রাখা আছে। আর মূল চিঠি আছে সৌদি আরবের মদিনা মিউজিয়ামে।
এ ছাড়া রোমের সম্রাট হিরাক্লিয়াসের কাছে মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ইসলামের দাওয়াত দিয়ে যে চিঠিটি পাঠিয়েছিলেন, তা এখন জর্ডানের কিং হুসাইন মসজিদে সংরক্ষিত রয়েছে। (সূত্র: আল-আরাবিয়া ডটনেট)।