লক্ষ্মীপুরে বিয়ের আগেই তরুণীর সন্তান প্রসব

0
1244

ইকবাল মোরশেদ, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ১৭নং ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড চরউভূতি গ্রামের হাসেম মাঝির বাড়িতে তরুণীর নিজ বাড়িতে বাচ্চা প্রসবের এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় যে, ক্যান্সারে আক্রান্ত মো. আবুল কাশেম মাঝির মেয়ে বিবি ফাতেমা আক্তার (শিরিন) ১৬ এর সাথে একই ওয়ার্ডের দুলাল দফাদার বাড়ির মনির হোসেন দুলাল এর ছেলে মোঃ সালাউদ্দিনের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠে।

ফুফাতো ভাই মোঃ কামাল উদ্দিনের স্ত্রী রানু আক্তার এর সহযোগীতায় ভাই এর সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে ননদ শিরিনকে বাধ্য করত।

শিরিনের ভাবি রানু আক্তার প্রায় সময় শিরিনকে সাথে করে নিয়ে যেতো তার বাপের বাড়িতে। বাপের বাড়িতে নিয়ে শিরিনকে জোরপূর্বক বাধ্য করাতো ভাই সালাউদ্দিন এর সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হতে, প্রায় ১ বছরের ভিতরে অন্তত ৬ মাসই এ ভাবে ননদ শিরিনকে বাধ্য করে ভাই সালাউদ্দিনের সাথে এ অবৈধ মেলামেশা করতে।

একপর্যায়ে বারবার অবৈধ মেলামেশা করার কারণে গর্ভবতী হয়ে পড়ে শিরিন ।
গর্ভের বিষয়টি সালাউদ্দিনকে বললে তিনি শিরিনকে বিয়ে করার আশ্বাস দেন এবং বাচ্চা নষ্ট না করার জন্যও বলেন। ঠিক ১০ মাস ১০ দিনের মাথায় শিরিন একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ।

অন্যদিকে ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য বিভিন্নভাবে সালাউদ্দিনের বোন রানু হুমকি ধমকি দিতে থাকে শিরিন আক্তারকে। পরে অসহায় শিরিন আক্তার লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানায়নি ।

এমনকি বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য শিরিনকে কোরআন শরিফ দিয়েও শপথ করান সালাউদ্দিনের বোন রানু আক্তার ।

গত (৬ এপ্রিল) মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঔই তরুণী বিয়ের আগেই সন্তান প্রসব করলে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয়রা ওই বাড়িতে ভিড় করতে থাকেন।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী বিবি ফাতেমা আক্তার শিরিন বলেন, আমার জীবনে যা ঘটার তা ঘটেই গেছে, এখন আমি আমার ছেলের পিতৃ পরিচয় চাই। আমার ছেলের বাবার নাম সালাউদ্দিন, আমি সালাউদ্দিনকে আমার স্বামী হিসেবে পেতে চাই, আমার আর কোন দাবি নাই, আপনারা আমার ছেলের বাবাকে ফিরিয়ে দেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার সঠিক বিচারের আশায় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন ও তার বাবা দুলাল দফাদার এর কাছে জানতে গেলে সালাউদ্দিনকে পাওয়া যায়নি, ঘটনার পর থেকেই সালাউদ্দিন পলাতক রয়েছে।

এ কারণে সালাউদ্দিনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি, তার বাবা দুলাল দফাদার গণমাধ্যমকর্মীদেরকে বক্তব্য না দিয়ে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে তাড়াহুড়ো করে পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে ৪নং ওয়ার্ডের নাছির মেম্বার বলেন, বিয়ের আগে বাচ্চা হওয়ার বিষয়টা আমি শুনেছি এবং ঔই রাতে আমি ঘটনার স্থলে গিয়ে বাচ্চাসহ শিরিনকে দেখে জিগ্যেস করলে সে সালাউদ্দিনের কথা বলে।।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সাইফুল হাসান রনি,র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, মেয়েটির পরিবার খুবই অসহায়, এ মূহুর্তে মেয়েটির পাশে দাঁড়ানোটা আমার নৈতিক দ্বায়িত্ব, তবে মেয়েটি বলেছে বাচ্ছার পিতা দুলাল দফাদারের ছেলে সালাউদ্দিন মেয়েটি আমাকে তার নাম বলেছে আরকি। অপরাধী যে হোক তার হতে হবে তাহ আইনের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ।

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানার এস আই আমির হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে আমি ঘটনার স্থলে যাচ্ছি,
আপনি এ বিষয়টি নিয়ে ওসি স্যারের সাথে যোগাযোগ করেন। এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জসিম উদ্দিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি শুনে আমি এস আই আমির হোসেনকে সেখানে পাঠাই, আমি ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় অভিযোগ করার জন্য বলেছি।

অন্যায় এর পক্ষে কোন আপোষ নই, অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে। এ বিষয়ে থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে ।

এনএইচ২৪/জেএ/২০২১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here