গল্পটি আত্মনির্ভর হওয়ার

0
2250

আমি ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়েটিভ কাজ গুলো করতে খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতাম। বড় হবার সাথে সাথে আমার পড়াশোনার সাথে বিভিন্ন ধরনের সেলাই, শোপিস তৈরী সহ বিভিন্ন রকম কাজ করতাম। পড়াশোনা শেষ করে যথারীতি একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করতে শুরু করি। কিন্তু নিজে কিছু করার সুপ্ত বাসনা আমার মনে রয়েই গিয়েছিল। তাই চাকরির পাশাপাশি আমার কাজ আমি থামিয়ে দেইনি।

২০২০ সালের প্রথমদিকে নিজে কিছু করার উদ্দেশ্যে অনলাইন পেইজ খুলি।যার নাম “সমন্বিতা “।কিন্তু তেমন একটা সাড়াও পায়নি পেইজটাকে ও গুছাতে পারিনি। ২০২০ সালের জুন মাসে উই নামক প্লাটফর্মে যুক্ত হয়েছিলাম। সেখানে মোটামুটি একটিভ থাকার পরে আমার মনে হয়েছে আমার ই-কমার্স নিয়ে আরো অনেক বেশি জানা দরকার। ২০২০ সালের জুলাই মাসে আমি ই-ক্যাবের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা রাজীব আহমেদ স্যারের অনন্য সৃষ্টি ডিজিটাল স্কিলস গ্রুপ অব বাংলাদেশ নামক লেখাপড়ার গ্রুপটিতে জয়েন করি।

তবে এর কিছুদিন পরে আমি ভালোভাবে গ্রুপ টিতে একটিভ হই।আমার মনে হয়েছে আমাকে দীর্ঘ মেয়াদী টিকে থাকতে হবে এবং এজন্য আমার নিজের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন সবার আগে।রাজীব আহমেদ স্যারের দিক নির্দেশনায় ১০ মিনিট রাইটিং পোস্ট সম্পন্ন করি। আশ্চর্য ব্যাপার যেই আমি বড় পোস্ট এড়িয়ে যেতাম সেখানে আমার পড়ার এবং বাংলা লেখার গতি নিজেকেই অবাক করে দিয়েছে।এখন কোন বিষয়ে লিখতে গেলে আমাকে ভাবতে হয় না আমার মাথা এবং হাত দুটোই সমানে চলে।

এরপর প্রেজেন্টেশান পোস্টগুলো লেখার ফলে আমার বিভিন্ন বিষয়ে সার্চ করে পড়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছে এবং অনেক জানা বিষয়েও বিশদভাবে জানার সুযোগ হয়েছে।

এরপর রিডিং সিলেবাস শুরু করি এবং আশ্চর্যজনকভাবে ইংরেজি দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।এখন ইংরেজি পত্রিকা পড়ে সহজেই বুঝতে পারি। তাছাড়া বিভিন্ন ব্লগে লেখা ইংরেজি আর্টিকেল পড়তে যেমন ভালো লাগে তেমনি নিজের কাজে ও লাগাতে সুবিধা হয়। সবচেয়ে বড় কথা পড়ার অভ্যাস তৈরি হয়ে গেছে যা আমার উদ্যেগের জন্য আমাকে সবসময় আপডেট রাখতে সাহায্য করবে।

ডিএসবি থেকে আমি পেইজ চালানোর বিভিন্ন কৌশল রপ্ত করতে পেরেছি। পেইজ সংক্রান্ত কোন সমস্যায় বিভিন্ন আর্টিকেল পড়লে সমাধান ও পাওয়া যায়। তাছাড়া ১০ মিনিট রাইটিং পোস্ট শেষ করার ফলে টাইপিং দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে তাই একইসাথে কয়েকজন কাস্টমারের সাথে সহজেই কথা বলতে পারি।ডিএসবি আমার ব্যবসায়িক দক্ষতা বৃদ্ধির অন্যতম সেরা স্কুল।

ফেইসবুকের আপডেট অনুযায়ী স্যার আমাদের বিভিন্ন ছোট ছোট গ্রুপ গুলোতে একটিভ থেকে নিজের পরিচিতি বাড়াতে বলেছেন। তেমনি প্রায় ১৫০০ সদস্যের ছোট একটি গ্রুপ নীল মৃত্তিকা পরিবার। এই গ্রুপের প্রধান উদ্দেশ্য পড়াশোনা কেন্দ্রিক। তাই এই গ্রুপে সময় কাটাতে অসম্ভব ভালো লাগে আমার। তাছাড়া এখানে একটিভ থাকার মাধ্যমে আমি নিজেকে পরিচিত ও করতে পারছি সকলের কাছে। কারন ছোট গ্রুপে সদস্য সংখ্যা কম তাই সবাইকে চিনতেও সুবিধা হয়।

আমি বর্তমানে দেশীয় শাড়ী নিয়ে কাজ করছি। আমার ৩ বছরের বাচ্চাকে নিয়ে আমার উদ্যোগের কাজ আমি একাই করছি। আমার উদ্যোগের নাম “সমন্বিতা “

নিজেকে দীর্ঘ মেয়াদে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে টিকিয়ে রাখতে চাইলে নিজের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। এজন্য ডিএসবি এক অনন্য অনলাইন শিক্ষা প্লাটফর্ম। বর্তমানে আমার উদ্যোগ পরিচালনায় নানাবিধ প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা ও ডিএসবি এর মাধ্যমে পায়। আর যেহেতু আমার কোন গ্রুপ নেই তাই আমি নীল মৃত্তিকা পরিবারের মত ছোট গ্রুপ গুলোতে থেকে গ্রুপ চালানোর মত দক্ষতার ও শিক্ষা গ্রহন করছি। আর এগিয়ে যেতে চাই “সমন্বিতা”কে নিয়ে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here