বই রিভিউ (সাতকাহন)

0
1437

সমরেশ মজুমদারের ‘সাতকাহন’ বাংলা সাহিত্যের এক সাড়াজাগানো উপন্যাস নিঃসন্দেহে। অত্যন্ত নারীবাদী এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘দীপা’ পুরোনাম ‘দীপাবলি বন্দোপাধ্যায়’। আড়ংভাসার তীরের সুবিশাল চা-বাগানের মধ্যে বেড়ে উঠেছে দীপা।

দশবছর বয়স থেকেই যাকে অতিক্রম করতে হয়েছে একের পর এক বাধা-বিপত্তি, কখনো বা দাঁড়াতে হয়েছে জীবনের অপ্রকাশিত অমোঘ সত্যের মুখোমুখি হয়ে। কিন্তু দীপা কখনোই হাল ছাড়েনি। নিরন্তর এগিয়ে গিয়েছে ওর স্বপ্নের রেখা ধরে।

পুরো উপন্যাস জুড়েই জীবনের বিভিন্ন ধাপে দীপাকে নিতে হয়েছে বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত। সবচেয়ে খারাপ সময়টা দীপা পার করেছে, বাবা অমরনাথের মৃত্যুর পর, পারিবারিক দুর্যোগকালে, চা-বাগানের চাকরিটা ফিরিয়ে দিয়ে। কিশোরী দীপার এই দৃঢ়চেতা আপোষহীন ব্যক্তিত্ব সত্যি মুগ্ধ করার মতো।

দীপার স্বপ্ন ছিলো আরও বড়, স্বপ্ন ছিলো এক উন্নত জীবনের। স্বপ্নগুলো একসময় পূরণ হলেও কালগর্ভে হারিয়ে যায় ওর আশপাশের আপন সব মানুষ,ওর মা, ছোট দুইভাই, বন্ধু-বান্ধব,এমনকি ভালোবাসার মানুষজনও। অতুল, অমল, শমিত, অর্জুন একে একে জীবন থেকে বিদায় নেয়ার পর দীপা গাঁটছড়া বেধে সংসার শুরু করে অলোকের সাথে। কিন্তু জীবন সম্পর্কে ওদের দৃষ্টিভঙ্গি পারস্পরিক বিপরীত হওয়ায়, সে সংসারও বেশিদিন স্থায়িত্ব পায় না।

সমাজের সব শৃঙ্খলা, রীতিনীতি-র শিকল ভেঙ্গে জীবনের পথ বেয়ে দীপা এগিয়ে চলে একরাশ শূন্যতা হাতে নিয়ে, পাশে থেকে ওর সঙ্গী হয় আরেক শূন্য মানবী, দীপার বৃদ্ধা ঠাকুমা মনোরমা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here