রেভিনিউ ওয়াটারের (এনআরডব্লিউ) নামে যেখানে চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে ঠিক সেই সময় তা কিভাবে কমানো যায় সেটা না ভেবে নিজের ব্যাক্তিগত র্স্বাথ উদ্বারে ব্যস্ত চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহ।
সম্প্রতি সর্বশেষ গত ৪ মে ওয়াসার ৬১তম বোর্ডে তিনি আরেক দফায় বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদন করেছেন। যদিও তার বর্তমান বেতন-ভাতা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
ওয়াসার বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সম্প্রতি এমডি বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদন করলে বোর্ড সভায় উত্থাপন করা হয়। সভায় আবেদন মূল্যায়ন করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বোর্ড সদস্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যজিত কর্মকারকে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। কমিটি প্রতিবেদন দেয়ার পর বোর্ড সদস্যরা অনুমোদন দিলে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলে তারপর বেতন-ভাতা বাড়বে।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কত টাকা বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদন করেছেন জানতে চাইলে ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই মুহূর্তে আমার মনে নেই। আমি ওয়াসায় ফুল টাইম কাজ করি না। আপনি ওয়াসার কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জেনে নেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওয়াসার এক বোর্ড সদস্য জানিয়েছেন, ‘এবার ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহ তার মূল বেতন ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার আবেদন করেন।’এক লাফে দেড় গুণ বেতন বাড়ানোর আবেদন নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে সেই সাথে এ আবেদন নৈতিকতা পরিপন্থী বলে জানিয়েছেন ওয়াসা সংশ্লিষ্ট কয়েকজন।
এ ব্যাপারে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট নাজের হোসাইন বলেন, যখন একটি প্রতিষ্ঠান লাভে থাকে, তখন ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি তোলা যায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকে ওয়াসা লস দিয়ে আসছে। সেখানে এমডির বেতন এক লাফে দেড় গুণ বাড়ানো নৈতিকতা পরিপন্থী। কারণ ওয়াসা কিছু দিন পর পরই ক্ষতি কমিয়ে আনতে পানির দাম বাড়ায়। ভোক্তাদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করে সেটি বেতন-ভাতা হিসেবে খরচ করাটা একেবারেই অন্যায়।
তিনি আরও বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন লোকসানে থাকার মানে হচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে অযোগ্যতার পরিচয় দিচ্ছেন। এরকম একজন অযোগ্য লোক কীভাবে বারবার নিয়োগ পাচ্ছেন চিন্তার বিষয়। যেই লোক চাকরি জীবনে মাত্র এক মাস তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন, সেই লোক এখন ওয়াসার এমডি। নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি সবসময় কীভাবে পুনরায় নিয়োগ পাবেন, তা নিয়ে ব্যস্ত। যে কারণে ওয়াসার কোনও অগ্রগতি হচ্ছে না।