ঈশ্বর জানেন
সাইফুল ইসলাম
- এক জীবনে মানুষ কি চায় বেশি, জানো প্রীতি?
- ওহে বালক, তোমাদের চাওয়া-পাওয়া
অনেক তা জানি! - হা হা হা, মেয়েদের চাওয়া বুঝি কম?
- যদি বলি কম, তুমি করবে ঢং! এক জীবনে মানুষ কি চায় বেশি সেটা বলো।
- ভালোবাসা চায়, ভালোবাসা।
ভালোবাসার ক্ষুধা অনেক; এই নশ্বর পৃথিবীতে। - তোমাদের ভালোবাসা মেয়ে কেন্দ্রিক, একজন মেয়েকে ভালোবাসলে হবে না, অনেক মেয়ে চাই। তোমরা হলে পুরুষ জাত। তোমাদের ভালো করেই চেনা!
- প্রীতি, তুমি এভাবে বলছো কেন?
- পুরুষদের সাথে কিভাবে বলবো?
- তুমি ঠিক আছো, শরীর খারাপ না তো প্রীতি?
- পুলক, আমি দুঃখিত! আসলে আমি ভাল নেই।
- সব পুরুষ কি এক? নেই কি কেউ ভালো?
- পুলক, আছে হয়তো! তোমাকে বলে ফেলি, আমি যখন আমার মায়ের গর্ভে, তখন আমার বাবা অন্য মহিলাকে বিয়ে করে। তারপর মা আমাকে নিয়ে বেঁচে আছে। তাই মাঝে-মাঝে তোমাদের পুরুষদের সহ্য করতে পারি না।
- তাহলে আমার সাথে মিশতে গেলে কেন?
-তোমাকে আমার অন্যরকম মনে হয়েছে। তোমার পুলক নামটাও ভাল লেগেছে।
- তোমার বেঁচে থাকার কারণ কি?
- তুমি যে বললে ভালোবাসার ক্ষুধা! আমিও
একই কারণে বেঁচে আছি।
চাই পৃথিবীর সব মানুষকে ভালোবাসতে। - আমিও চাই ভালোবাসতে।
- তোমাদের নিয়ে বিশ্বাস নেই!
- প্রীতি, আমি যদি বলি—
তুমি আমার পৃথিবী, তুমিই আমার সব। - বলতে পারো, কাছে আসতে পারো।
আবার চলে যাবে তা আমি জানি পুলক! - প্রীতি, তুমি আমায় ভেবো না এমন।
আমি খুউব ভালোবাসি তোমায়! - বিশ্বাস করতে বলছো তোমায়?
- হুম, সত্যি অনেক ভালোবাসি তোমায়।
- না পুলক, প্রেম না। বিয়ে করতে পারবে এখন আমায়?
- তাহলে হাত ধরো প্রীতি, কাজী অফিসে
চলো!
দু’জনের বিয়ের দুই বছর পর—
প্রীতি তার পেটে হাত বুলিয়ে, বাবুটাকে ছোঁয়ার বৃথা চেষ্টা করছে। টেবিলের উপর ডিভোর্স পেপার। পুলক ডিভোর্স দিয়েছে প্রীতিকে।
প্রীতির দু’চোখের কোণ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। মা-মেয়ের জীবন কাহিনী কেমন করে এক হয়ে গেলো; তা শুধুমাত্র ঈশ্বর জানেন।
এনএইচ২৪/জেএস/২০২১