ঐতিহ‌্যের সাম্পান নৌকা

0
1247

বাংলার মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। তবে সময়ের সাথে সাথে আমরা হারাতে বসেছে বাংলার এসব ঐতিহ্যকে। দিন দিন বিলুপ্ত হচ্ছে প্রাচীন সংস্কৃতি, আধুনিকতা যেন সবকিছুকে দাবিয়ে রাখছে।

আজ এমনই এক ঐতিঞ্যর কথা জানাব যা বাংলার বুকে আজ নিজের অস্তিত্ব ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। ঐতিহ্যময় সাম্পান নৌকা। কক্সবাজারের উপকূলে বিশেষ ধরনের এ নৌকা এক সময় মালামাল পরিবহন ও যাত্রী পারাপারের কাজেই ব্যবহৃত হতো। কালের বিবর্তনে পাল-বৈঠা ছেড়ে এখন ইঞ্জিনের অলঙ্কার পরে মাছ ধরতে গভীর সাগর পাড়ি দেয়।

আগে বৃহত্তর চট্টগ্রামে বিশেষ ধরনের এ নৌকাটির ছড়াছড়ি থাকলেও বর্তমানে আর তেমন দেখা যায় না। তবে দক্ষিণ কক্সবাজারে সমুদ্রগামী মাছ ধরার সাম্পান নৌকাগুলো নির্মাণ শিল্পের ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছে। বর্ষার শুরুতে কক্সবাজারের খুরুশকুল, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, টেকনাফের শামলাপুরসহ উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে চলছে সাম্পান তৈরির কর্মযজ্ঞ।

মাছ ধরার এসব সাম্পানের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭ ফুট, প্রস্থ ৯ ফুট। প্রতিটি নৌকা তৈরি করতে কারিগরদের পারিশ্রমিক দিতে হয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।

উপকূলীয় এসব এলাকায় মৎস্যজীবী মহাজনদের বেশ কয়েকটি করে সাম্পান নৌকা রয়েছে। প্রতিটি নৌকা তৈরি, ইঞ্জিন যুক্ত করা এবং জালসহ আনুষঙ্গিক খরচ লাগে প্রায় সাত-আট লাখ টাকা। উপকূলীয় অঞ্চলে বেশিরভাগ বাড়িতেই নৌকা আছে। অনেকের দুই-তিনটি করে নৌকা রয়েছে। এসব নৌকার সৌন্দর্য পর্যটকদেরও আকর্ষণ করে।

আগের সাম্পানগুলো বর্তমান প্রজন্ম দেখেনি। দিন দিন পরিবর্তনের ফলে ছোট সাম্পানগুলোও আস্তে আস্তে বিলুপ্তির পথে হাঁটছে।সময় বদলে গেলেও ঐতিহ্য বদলায় না। তাই দেশের ঐতিহ্যগুলো টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি সরকারকেও যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here