একমাত্র জনমানুষের ইতিহাসই লেখা হয় সময়ের গায়ে

0
1484

#IndiaNeedsOxygen

মাত্র দুই বছর আগে ২০১৮ সালে বিজেপি সরকার গুজরাটে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তিটি বানানোর কাজ শেষ করে। মূর্তিটিকে মোদি সরকার থেকে বলা হয়, এটি নতুন ভারতের ইতিহাস ও জাতীয়তাবাদকে নির্মান করবে।

২ লক্ষ ৫০ হাজার ঘনফুট কংক্রিট, ৫ হাজার ৭০০ টন স্টিল এবং সাড়ে ১৮ হাজার ঘনফুট রডে তৈরি এই স্থাপনা তৈরিতে খরচ হয় ৪৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অথবা ২৯.২ বিলিয়ন ভারতীয় রুপি। জ্বি, এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু মূর্তি- নিউইয়র্কের স্ট্যাচু অফ লিবর্টি থেকে চার গুন উঁচু।

বাইরের পৃথিবী হয়তো জানে না, গত দুই বছর থেকেই ভারত ৬০০ ফুট উঁচু পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মূর্তিটির মালিক।

কেরালাতেও সরকার চেয়েছিলো এরকম আরেকটি জাতীয়তাবাদী প্রজেক্ট। কিন্তু কেরালার বামপন্থী রাজ্য সরকার ২০২০ সালের শুরুতে নিজেদের রাজ্যে করোনা পরিস্থিতিতে অপ্রতুল অক্সিজেনের কথা চিন্তা করে মাত্র ৭৮ কোটি রুপি দিয়ে তিনটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মান করে।

বড়জোড় ৬০ ফুট উঁচু এই তিনটি অক্সিজেন টাওয়ার এখন সমস্ত মূমুর্ষ ভারতের ফুসফুস হিসাবে কাজ করছে। এর উৎপাদিত এক একটি ঘনফুট অক্সিজেন আজকে আক্ষরিক অর্থেই রক্ষা করে যাচ্ছে এক একটি মহামূল্যবান মানব প্রান।

প্রতিদিন নিরলসভাবে ১৯৯ মেট্রিকটন বিষুদ্ধ অক্সিজেন সরবরাহ করে যাচ্ছে কেরালার এই প্লান্টটি। এই মূহুর্তে শুধু ভারতেই নয়, সমস্ত পৃথিবীর মাঝে সবচেয়ে মূল্যবান যে’কটি মানবসৃষ্ট স্থাপনা আছে কেরালার এই ছোট্ট ৬০ ফিটের অক্সিজেন প্ল্যান্টগুলি তার মাঝে অন্যতম।

প্রত্যেক দেশের প্রত্যেক সরকারের একটা রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকবেই। কিন্তু সেই এজেন্ডা যদি হয় গনবিরোধী, উগ্র জাতীয়তাবাদে নিমজ্জিত তবে আজ হোক, কাল হোক উন্নয়নের অলীক ফানুস মাত্র কয়েকদিনেই ফুস করে নিভে যাবে।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মূর্তিটি তৈরির সময়ও ভারতের জনগন ক্ষিপ্ত, দ্বিধা বিভক্ত ছিলো। ক্ষমতায় যারা ছিলেন তাদের মাঝে কোন সংশয় ছিলো না। তারা চেয়েছিলেন বিকট এবং জড় কংক্রিটের বস্তুপিন্ডের উপরে নিজেদের ইতিহাস লিখতে।

কিন্তু, ইতিহাস বলে, একমাত্র জনমানুষের ইতিহাসই সময়ের গায়ে লেখা হয়। ক্ষমতা এমন এক প্রহেলিকা যা যুগ যুগ ধরে পৃথিবীর ইতিহাসে আমাদের সবচেয়ে বড় ভূলগুলো করার জন্য দায়ী।

আমাদের পাশের বন্ধু দেশের কোটি কোটি মানুষ আজ চরম আতংকের সাথে সময় পার করছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন শংকাজনক অবস্থায়। তাই সবাইকে সর্তক থাকা অত্যন্ত জরুরি। সবাই নিরাপদে থাকুন, অন্ধকার ট্যানেলের শেষ মাথায় আলো আসবেই।

এনএইচ২৪/জেএস/২০২১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here